কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কাঁঠালকে আমাদের জাতীয় ফল বলা হয়। কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমরা সবাই কম বেশি কাঁঠাল পছন্দ করি। কাঁঠাল খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে, তেমনি কিছু অপকারিতাও রয়েছে।

আপনি যদি কাঁঠাল খেতে অনেক ভালোবাসেন তাহলে কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা রাখা উচিত।

কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা

কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। যার ইংরেজি অর্থ Jack fruit । পাকা কাঁঠাল পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ থাকে। কাঁঠালে রয়েছে আমিষ,শর্করা,আঁশ,প্রোটিন,ক্যালসিয়াম,ফসফরাস,আয়রনসহ নানান সব পুষ্টি উপাদান। ভিটামিনের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ,ভিটামিন সি এবং অল্প পরিমাণে ক্যালরি। 

সাধারণত কাঠাল হল গ্রীষ্মকালীন ফল। বছরে একবার কাঁঠাল পাওয়া যায়। তাই ছোট-বড় সবার উচিত কমবেশি করে কাঁঠাল খাওয়া। চলুন,কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ-

.কাঁঠাল নানা রকমের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সাথে মোকাবেলা করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

.কাঁঠাল শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।

.আমাদের দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

.কাঁঠাল শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

.কাঁঠাল শরীরকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে।

.কাঁঠাল শরীরের হাড়,দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে।

.কাঁঠাল থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করে থাকে।

.হতাশা বিষন্নতা দূর করতে কাঁঠাল ভূমিকা রাখে।

.কাঁঠাল দেহের মুক্ত অনু ধ্বংস করতে সাহায্য করে।

.আলসার দূর করতে কাঁঠালের অনেক উপকারিতা রয়েছে।

.কাঁঠাল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

.কাঁঠাল পাইলস দূর করতে সাহায্য করে।

.কোলেস্টেরল কমাতে কাঁঠাল সাহায্য করে।

.কাঁঠাল শরীরের ক্ষত সারাতে ভূমিকা পালন করে।

.কাঁঠাল হার্টের সমস্যা দূর করে।

.কাঁঠাল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

.শরীরের লাবণ্যতা ধরে রাখে।

.রাতকানা রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।

.সর্দি-কাশি সংক্রমণ রোগ থেকে রক্ষা করে।

কাঁঠাল খাওয়ার অপকারিতা

জাতীয় ফল হিসেবে কাঁঠাল যে শরীরের উপকার করবে তা নয় অতিরিক্ত কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা ও রয়েছে। চলুন,কাঁঠাল খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানা যাকঃ-

অতিরিক্ত কাঁঠাল খেলে বদহজম হবার আশঙ্কা থাকে। কাঁঠাল অনেক সময় গ্যাস্ট্রিকের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আবার ডায়াবেটিস রোগীর জন্য যেমন কাঁঠাল ভালো,সেই সাথে অতিরিক্ত কাঁঠাল খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। 

অতিরিক্ত কাঁঠাল খাওয়ার কারণে ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যায়। আবার অতিরিক্ত কাঁঠাল খেলে শরীরে এলার্জির লক্ষণও দেখা দিতে পারে। তাই আমরা কাঁঠাল পরিমাণ মতো খাওয়ার চেষ্টা করব।

গর্ভাবস্থায় কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভবতী মায়েদের কাঁঠাল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। গর্ভবতী মায়েদের ডাক্তার নিয়মিত ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। চলুন,গর্ভাবস্থায় কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাকঃ-

.গর্ভাবস্থায় কাঁঠাল খেলে বাচ্চাদের চোখের গঠন সুন্দর হয়।

.গর্ভাবস্থায় কাঁঠাল খেলে বাচ্চাদের হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে।

.বাচ্চার মস্তিষ্ক গঠনে সাহায্য করে।

.গর্ভবতী মায়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

.বাচ্চার পেশি গঠন করতে সাহায্য করে।

.কাঁঠাল গর্ভবতী মহিলাদের ক্লান্তি ভাব দূর করতে সাহায্য করে।

.বাচ্চার হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে।

কাঁঠালের বিচি খাওয়ার উপকারিতা

কাঁঠালে যেমন প্রচুর পুষ্টি রয়েছে,তেমনি কাঁঠালের বিচিতেও রয়েছে অধিক মাত্রার গুণাগুণ। কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে ভিটামিন বি-১ ও ভিটামিন বি-12 । এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ,ভিটামিন সি,থায়ামিন, ফাইবার ও কমপ্লেক্স সহ নানান সব পুষ্টি উপাদান। 

কাঁঠালের বিচি আমরা অনেকেই ফেলে দিই,আবার অনেকেই এটি ভেজে খায় বা তরকারি হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। কাঁঠালের বিচি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কাঁঠালের বিচি ভর্তা করে আবার বিচি দিয়ে ডাল রান্না করেও খেতে পারেন। চলুন,জেনে আসি কাঁঠালের বিচির উপকারিতা সম্পর্কেঃ-

.কাঁঠালের বিচি হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে সেই সাথে বদহজম বন্ধ করে।

.কাঁঠালের বিচি ত্বকের বিভিন্ন রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে।

.কাঁঠালের বিচি খাওয়াই শরীরের আয়রনের মাত্রা বাড়ায়।

.কাঁঠালের বিচি চুলের আগা ফাটা বন্ধ করতে সাহায্য করে।

.কাঁঠালের বিচি আমাদের চুল পড়া বন্ধ করে।

.কাঁঠালের বিচি আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

.কাঁঠালের বিচি আমাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

.কাঁঠালের বিচি খাওয়ার কারণে হার্ট ভালো থাকে।

.আমাদের রক্তস্বল্পতা দূর করতে এটি ভূমিকা রাখে।

.কাঁঠালের বিচি অ্যানিমিয়া রোগ নিরাময় করে।

.কাঁঠালের বিচি খেলে এটি আমাদের মস্তিষ্ককে সুস্থ সবল রাখে।

.এটি আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

কাঁঠাল খাওয়ার পর কি কি খাওয়া যাবেনা

আপনারা যখন কাঁঠাল খাবেন এবং খাওয়া শেষ করার পর কখনোই ঢেঁড়স খাবেন না। এটা আপনার স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি করতে পারে। আপনি খেয়াল রাখবেন কাঁঠাল খাওয়ার পর কোনক্রমেই পান খাওয়া যাবেনা। এতে করে আপনার খাবার হজমের সমস্যা হবে। 

আমরা অনেক সময় একসাথে অধিক পরিমাণ ফল খেয়ে থাকি। আপনারা মনে রাখবেন,ভুলেও কাঁঠাল খাওয়ার পর পেঁপে খাবেন না।আপনারা যখন কাঁঠাল খাবেন ভুলেও কাঁঠাল খাওয়ার পর দুধ খাবেন না এতে করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।

খালি পেটে কাঁঠাল খেলে কি হয়

খালি পেটে কাঁঠাল খেলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি হয়।

খালি পেটে কাঁঠাল খেলে পেট পরিষ্কার থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কাঁঠালে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম,যা হাড় মজবুত করে।

কাঁচা কাঁঠাল

কাঁঠাল আমরা ফল হিসেবে চিনি। এটি পাকা অবস্থায় খাওয়া যায় এবং কাঁচা অবস্থায়ও খাওয়া যায়। কাঁচা অবস্থায় এটিকে সবজি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বাঙ্গালীদের ঘরে কাঁচা কাঁঠালের ঝোল থাকলে এটি থেকে লোভ সামলানো অনেক কঠিন হয়ে যায়। কাঁচা কাঁঠাল পুষ্টিকর হলেও যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এটি খাওয়া উচিত নয়।

আমাদের শেষ কথা

কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের সকলের জানা উচিত। আমরা আপনাদের মাঝে কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি একজন সচেতন ব্যক্তি হয়ে থাকেন,তাহলে আপনার এসব বিষয় সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। আমাদের সাথে এতক্ষণ থাকার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ।

যদি আপনি এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে চান তাহলে অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ফলো করতে হবে। আমরা এই ধরনের আর্টিকেল আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত প্রকাশ করে থাকে। আপনি এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য সুস্থতা কামনা করে এখানেই শেষ করছি।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এন বি ট্রিক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট এর রিভিউ করা হয়।

comment url