খেজুর খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
খেজুর কে বলা হয় জান্নাতি ফল। খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে হাদিসেও বর্ণনা করা আছে। খেজুর ফল খুবই পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। তাই নিজেকে সুস্থ সবল রাখতে খেজুর খাওয়ার প্রয়োজন। অনেকে আছেন যারা অতিরিক্ত মিষ্টি খেতে পারেন না,তাদের জন্য খেজুর খাওয়া খুবই সহজ। কেননা খেজুরে মিষ্টির পরিমাণ কম থাকে।খেজুর শুধু পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফলই নয় এর মধ্যে রয়েছে নানান রোগ ব্যাধি নিরাময়ের উপায়। আজকে আপনাদের মাঝে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
বেশিরভাগ মানুষই রোজার মাস ছাড়া খেজুর খায় না। কিন্তু নিয়মিত যদি খেজুর খাওয়া হয় তাহলে আমাদের শরীরের জন্য সেটা অনেক উপকার করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কেঃ-
. খেজুর আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
. খেজুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
. খেজুর শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
. শরীরের হাড় মজবুত করতে খেজুর সাহায্য করে।
. প্রতিদিন নিয়মিত খেজুর খেলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
. শরীরের ওজন বাড়াতে খেজুর সাহায্য করে।
. শরীরের গ্লুকোজের অভাব দূর করতে সাহায্য করে।
. যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে খেজুর সাহায্য করে।
. শিশুদের মাড়ি শক্ত করতেও খেজুর ভূমিকা রাখে।
. খেজুর বীর্যের ঘনত্ব তৈরি করে।
. উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
. খেজুর শরীরের ত্বক ভালো সুন্দর রাখে।
. খেজুর ক্ষুধার ভাব কমাতে সাহায্য করে।
যারা অতিরিক্ত পরিশ্রম করে,তাদের জন্য খুবই উপকারী ফল হলো খেজুর। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে,যা শরীরের ক্লান্তি দূর করতে অনেক সাহায্য করে। এছাড়াও খেজুরে রয়েছে ভিটামিন এ,ভিটামিন বি,ভিটামিন সি,ভিটামিন কে।
আরোও রয়েছে ক্যালসিয়াম,আয়রন,পটাশিয়াম,ফসফরাস ও জিঙ্ক সহ নানান পুষ্টিকর উপাদান। যা উপরিউক্ত সকল রোগ-ব্যাধি নিরাময় করে। এক কথায় শরীরের অধিকাংশ রোগ সারাতে খেজুরের কোন বিকল্প নেই। তাই নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
খেজুর বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। তার মধ্যে একটি হলো শুকনো খেজুর। চলুন,শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাকঃ-
. শুকনো খেজুর শরীরের নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে।
. শুকনো খেজুরের সাথে দুধ মিশিয়ে খেলে শরীরের ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল করে।
. শুকনো খেজুর শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে।
. শুকনো খেজুর গুড়ো করে দুধের সাথে মিশিয়ে বাচ্চাদের খাওয়াতে পারেন। এতে করে বাচ্চাদের
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
খেজুরের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না,যতই বলবো ততই কমই বলে মনে হবে।
পুরুষদের জন্য খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
নিজেকে সুস্থ ও সবল রাখতে খেজুর খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। খেজুরে অধিক পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা পুরুষদের শরীরের দুর্বলতা কাটিয়ে তুলতে সাহায্য করে। খেজুর পুরুষের স্নায়বিক শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। খেজুর শ্রমজীবী পুরুষের দেহের গ্লুকোজের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে।
অনেক পুরুষই আছেন যারা ক্লান্তি অনুভব করেন। তাদের এই ক্রান্তি দূর করতে খেজুর খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। অনেক পুরুষ আছেন যারা যৌন সমস্যা নিয়ে চিন্তিত। তারা যদি নিয়মিত পরিমাণ মতো খেজুর খান তাহলে এই সমস্যা দূর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেসব পুরুষের বীর্য পাতলা তাদের বীর্য ঘন করতে খেজুর ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
অনেক পুরুষই আছেন যারা ক্লান্তি অনুভব করেন। তাদের এই ক্রান্তি দূর করতে খেজুর খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। অনেক পুরুষ আছেন যারা যৌন সমস্যা নিয়ে চিন্তিত। তারা যদি নিয়মিত পরিমাণ মতো খেজুর খান তাহলে এই সমস্যা দূর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেসব পুরুষের বীর্য পাতলা তাদের বীর্য ঘন করতে খেজুর ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
গর্ভবতী নারীদের খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভবতী নারীদের শরীরে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি শক্তি প্রয়োজন। খেজুর তাদের শরীরে শক্তির যোগান দেয়। গর্ভের বাচ্চার হাড় ও দাঁত গঠন সহ শরীরের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গর্ভের বাচ্চাকে প্রতিবন্ধী হওয়া থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। খেজুরে ম্যাগনেসিয়াম এর পরিমাণ প্রচুর রয়েছে।
গর্ভবতী নারীর শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে খেজুর সহায়তা করে। কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভোগেন নাই এমন গর্ভবতী মা কমই আছেন,এই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে। শিশুর জন্য ভিটামিন কে সরবরাহ করে।
দিনে কয়টি খেজুর খাবেন
প্রতিদিন কয়টি করে খেজুর খাওয়া উচিত এ বিষয়ে আমাদের অনেকের জানা আছে আবার অনেকেরই জানা নেই।খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে কমবেশি আমরা সবাই জানি। আপনার শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর করতে দিনে ৪-৫ টি করে খেজুর খেতে পারেন।
এতে করে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং শরীরকে সুস্থতা দান করবে। এছাড়াও খেজুরের তৈরি মিল্কশেক,খেজুরের হালুয়া এবং নানা ধরনের ডেজার্ট তৈরি করে খেতে পারেন।
খেজুরের মিল্কশেক তৈরির নিয়ম
খেজুরের মিল্কশেক তৈরি করতে প্রথমে ১০ থেকে ১২টা খেজুর একটি বাটিতে ভালো করে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর খেজুর থেকে খেজুরের বিচি গুলো বের করে নিতে হবে। তারপর একটি ব্লেন্ডারের মধ্যে প্রথমে বিচি বের করে রাখা খেজুর দিতে হবে।
তারপর ৫চা চামচ গুড়া দুধ,৩চা চামচ মধু ও পরিমান অনুযায়ী লিকুইড দুধ দিতে হবে। লিকুইড দুধ টি জাল করে ঠান্ডা করে নিতে হবে। এরপর লিকুইড দুধটি ব্লেন্ডারে দিতে হবে। তারপর সব উপকরণ একসাথে ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।
ব্যাস,তৈরি হয়ে গেল খেজুরের মিল্কশেক।এরপর আপনার পছন্দ অনুযায়ী গ্লাসে মিল্ক শেকটি পরিবেশন করুন।
সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
. গ্লুকোজের ঘাটতি যোগান দিতে সাহায্য করে ।
. খেজুর রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে ।
. সকালে খেজুর খেলে ক্ষুধা নিবারণ হয়।
. সকালে খেজুর খেলে হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ।
. সকালে খেজুর খেলে মস্তিষ্ক সচল থাকে।
. সকালে খেজুর খেলে চুল ও ত্বকের সৌন্দর্য বজায় থাকে ।
খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়
খেজুরে রয়েছে অনেক উপকারিতা ও ঔষধি গুণ। খেজুর দিনের যেকোনো সময় খেতে পারেন। তবে কিছু নির্দিষ্ট সময়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আপনি সকালে খালি পেটে ৩-৪টি খেজুর খেতে পারে। আবার সকালে খাওয়ার পর ও দুপুরের খাবারের আগে খেতে পারেন।
বিকালে অথবা সন্ধ্যার সময়ও খেতে পারেন। তবে এটি সকালে খালি পেটে খেলে বেশি উপকারিতা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আপনাদের শরীরকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে প্রতিদিন নিয়মিত খেজুর খাবেন।
আমাদের শেষ কথা
আমরা আপনাদের মাঝে খেজুর খাওয়ার নিয়ম এবং খেজুর খাওয়ার প্রধান কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি । আপনি যদি একজন সচেতন ব্যক্তি হয়ে থাকেন,তাহলে আপনার এসব বিষয় সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। আমাদের সাথে এতক্ষণ থাকার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ।
যদি আপনি এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে চান তাহলে অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ফলো করতে হবে। আমরা এই ধরনের আর্টিকেল আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত প্রকাশ করে থাকে। আপনি এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য সুস্থতা কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
এন বি ট্রিক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট এর রিভিউ করা হয়।
comment url