চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
চিয়া সিড সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। চিয়া সিড খাওয়ার বহুবিধ উপকার রয়েছে। চিয়া সিডস অত্যান্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। এই খাবারের উপকারের পাশাপাশি কিছু অপকারিতাও রয়েছে।
চিয়া সিডস আপনার শরীরের জন্য কতটা উপকারী এবং কতটা ক্ষতিকর সেই বিষয়ে আলোচনা করব। চলুন,চিয়া সিডস এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক:-
চিয়া সিডস খাওয়ার উপকারিতা
চিয়া সেট খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। বেশিরভাগ মানুষই ডায়েটে রাখে চিয়া সেট। চিয়া সিডে দুধের থেকে পাঁচ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম,পালং শাকের থেকে ছয়গুণ বেশি আইরন এবং কমলা লেবুর থেকে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি থাকে। সিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন,ফসফরাস,জিংক,ম্যাগনেসিয়াম,ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড সহ নানান ধরনের পুষ্টিকর উপাদান।
চিয়া সেট কে বলা হয়ে থাকে ডায়াবেটিস রোগের বন্ধু। কেননা চিয়া সিডের গ্লাইসামিক ইনডেক্স লো।এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় খাবার। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার। যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার হলো ক্রিয়া সেট।
চিয়া সিডে থাকা ফাইবার হার্টের সমস্যা দূর করতে ভূমিকা পালন করে। চিয়া সিটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আমাদের দেহের হাড়,মাংসপেশি মজবুত করতে খুবই সাহায্য করে চিয়া সেট। কেননা চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস। চিয়া সিডস আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
খালি পেটে রোজ সকালে চিয়া সিডস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ ভালো হয়ে যায়। চিয়া সিড ব্রেস্ট ক্যান্সারের মতো নানান ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে শরীরকে ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা করে। আমাদের দেহের মুক্ত অনু ধ্বংস করে শরীরকে সুস্থ সবল রাখে চিয়া সিড। চিয়া সিডস ত্বকের তা শুষ্কতা দূর করতে সহায়তা করে। ত্বককে রাখে সুস্থ,মসৃণ ও টানটান। চিয়া সিড ওজন কমাতে সহায়তা করে।
চিয়া সিড শরীরের আয়রনের ঘাটতি দূর করতে সাহায্য করে। গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা দূর করতে চিয়া সিড অত্যন্ত কার্যকরী খাবার । চিয়া সিড চুল ও হাত পায়ের নখকে সুন্দর রাখে। চিয়া সিড শরীরকে শক্তিশালী করে তোলে । চিকিৎসকেরা চিয়া সিডকে সুপার ফুড বলে থাকে। চিয়া সিড রক্তের ব্লাড সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে চিয়া সিড। শরীর থেকে খারাপ টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে এই চিয়া সিড।
সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
এখনকার সময়ে স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিরা তাদের খাবারের তালিকায় চিয়া সিডের ব্যবহার সবার আগে রাখেন। কেননা চিয়া সিট ডায়েটে দারুন ভূমিকা পালন করে থাকে।প্রতিদিন সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। শরীরের খারাপ বর্জ্য বের করতে চিয়া সিড দারুন ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ছিয়া সিট খেলে গ্যাসের সমস্যা দূর হবে। দ্রুত ওজন কমাতে চিয়া সিডের অবদান অনেক।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
সাধারণত চিয়া সিডের নিজস্ব কোন স্বাদ নেই। তাই আপনি যেকোনো খাবারের সাথে যোগ করে চিয়া সিডখেতে পারেন। আপনি চাইলে টক দই,কাস্টার্ড,ফালুদা,চিনি বা লেবুর শরবতের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। খাওয়ার আগে প্রথমে এটিকে ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর এটি খেলে আপনার জন্য ভালো হবে। নিয়মিত খালি পেটে ও রাতে ঘুমানোর এক ঘন্টা আগে খেলে বেশি উপকার পাবেন।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
চিয়া সিড বিভিন্নভাবে খাওয়া যায় । তবে ওজন কমাতে চিয়া সিড কিভাবে খাবেন তা নিয়ে আপনাদের মাঝে আলোচনা করব। ওজন কমাতে প্রয়োজন হয় ডায়েটের। এ ডায়েটের পাশাপাশি আপনি চিয়া সিড খেতে পারেন। এক গ্লাস পরিমাণ পানির মধ্যে ২চা চামচ চিয়া সিড,২ চা চামচ টক দই,১চা চামচ লেবুর রস দিয়ে মিশিয়ে ৩০মিনিটের মতো ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সকালে খাবারের পর খেয়ে নিন ।এতে করে আপনার ক্ষুধার ভাব কম হবে। আপনি চাইলে সকালে খালি পেটে ও রাতে শোয়ার আগে খেতে পারেন। নিয়মিত এটি ব্যবহারে আপনার ওজন দ্রুত কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক সময়
সকালে খালি পেটে ও রাতে শোয়ার ১ঘন্টা আগে চিয়া সিড খাওয়ার উপযুক্ত সময়। এক গ্লাস পানিতে ২চা চামচ চিয়া সিড ও ১চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে 30 মিনিটের মতো বা সারারাত ভিজিয়ে রেখে খেলে বেশি উপকার পাবেন।
চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা
সব খাবারেরই ভালো দিক থাকে, পাশাপাশি ক্ষতিকর দিকও থেকে থাকে। সব খাবার খাওয়ার আগে ভালো- খারাপ দুই দিকই বিবেচনা করতে হয়। চিয়া সিডেও কিছু অপকারিতা রয়েছে ।চলুন,চিয়া সিডের অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক:-
চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। তাই অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে আপনার ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তারপর অনেক রোগী আছেন, যারা তাদের কোন নির্দিষ্ট রোগের জন্য নিয়মিত ওষুধ সেবন করে থাকেন। তাদের জন্য চিয়া সিড ক্ষতি করতে পারে । গর্ভবতী মহিলাদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া চিয়া সিড খাওয়া উচিত না। উপরিউক্ত সমস্যাগুলি ছাড়া চিয়া সিডের তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
আমাদের শেষ কথা
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের সকলের জানা উচিত। আমরা আপনাদের মাঝে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি একজন সচেতন ব্যক্তি হয়ে থাকেন,তাহলে আপনার এসব বিষয় সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। আমাদের সাথে এতক্ষণ থাকার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ।
যদি আপনি এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে চান তাহলে অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ফলো করতে হবে। আমরা এই ধরনের আর্টিকেল আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত প্রকাশ করে থাকে। আপনি এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য সুস্থতা কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
এন বি ট্রিক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট এর রিভিউ করা হয়।
comment url